বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি: শ্রমিক ধর্মঘটের নামে সাধারণ মানুষেকে হয়রানি করার প্রতিবাদে মুখে কালো মবিল মেখে প্রতিবাদ জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে এক মানববন্ধনে তারা এ প্রতিবাদ জানান।
এ সময় শ্রমিক আন্দোলনে নারী নির্যাতন, শিশুহত্যা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির প্রতিবাদও জানান আন্দোলনকারীরা।
মানবন্ধনে তিনটি দাবি উপস্থাপন করা হয়। এগুলো হল- ১. শিক্ষার্থীদের অবাধ চলাচল নিশ্চিত করা ২. আন্দোলনের নামে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি সৃষ্টি না করা এবং ৩. অ্যাম্বুলেন্সসহ অন্যান্য রোগী বহনকারী গাড়ি চলাচল করতে দেয়া।
মানবন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, দাবি আদায়ের পরিপ্রেক্ষিতে শ্রমিকরা চাইলে একজন নারীকে লাঞ্ছনা করতে পারে না। রোববার আমরা যে ধরনের দৃশ্য দেখতে পেয়েছি, তা খুবই নৃশংস। আমরা মনে করি একজন রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে তারা আন্দোলন করতে পারে। কিন্তু তারা বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে পারে না।
এ ধরনের নির্যাতনের নিন্দা জানান তারা। শিক্ষার্থীরা বলেন, পুরো পরিবহন সেক্টরকে নিয়ন্ত্রণ করছেন শাহজাহান খান। এখানে শ্রমিকদের সাধারণ মানুষের বিপরীতে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শ্রমিকদের মাফিয়া শ্রেণি নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম বলেন, একজন শ্রমিকনেতা (শাজাহান খান) আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন, কিন্তু তিনি বলেছেন আন্দোলন সম্পর্কে কিছু জানেন না। তিনি একদিকে শ্রমিক নেতা অন্যদিকে মন্ত্রীর দায়িত্বেও আছেন। যখন সংসদে আইনটি পাশ হয়েছে, তখন তিনি এটিকে সমর্থনও করেছেন। আবার তিনিই কেন আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন?
আন্দোলনের নামে শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, এটা কোন আন্দোলনের আচরণ হতে পারে না। এখন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা চলছে। শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষা দিতে যেতে পারছে না। পুরো দেশটা এখন অচলাবস্থায় পরিণত হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী আবদুল করিম বলেন, সংবিধান যেকোনো রাষ্ট্রের নাগরিকদের আন্দোলন করার অধিকার দিয়েছে। এটা তাদের সাংবিধানিক অধিকার। তবে আন্দোলনের নামে কোন নাগরিকের পথ অবরোধ করার অধিকার সংবিধানে দেয়া হয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা এসব অরাজকতা মেনে নিতে পারি না।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা ‘ভর্তি পরীক্ষার্থীদের ভোগান্তি কেন?’, ‘আলকাতরা সন্ত্রাস নিপাত যাক’, ‘দেশের বুকে চুনকালি শ্রমিক নেতার নেই বুলি’, ‘স্কুল ড্রেসে কালি কেন?, ‘কালি নাকি কলঙ্ক?’ ইত্যাদি লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।